December 24, 2024, 2:42 am
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাঁদা না দেওয়ায় পুলিশের সামনে উত্তরায় ৬ নম্বর সেক্টর কল্যাণের সভাপতির ওপর হামলা করা হয়। ছবি: ফুটেজ থেকে নেওয়া
চাঁদা না দেওয়ায় পুলিশের সামনে রাজধানীর উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির সভাপতি বশির উদ্দিনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। আজ শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে দুর্নীতি রিপোর্ট ২৪.কমের হাতে হামলার ওই ভিডিও ফুটেজটি আসে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বশির আহমেদ একটি চেয়ারে বসা। তাঁকে টানা হেচড়া করছেন বৃদ্ধ ও মধ্য বয়স্ক কয়েকজন। কয়েকজন ধর ধর করেই মারছেন। এদিকে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্য হামলাকারীদের নিবৃত্ত চেষ্টা করছেন।
উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বশির উদ্দিন দুর্নীতি রিপোর্ট ২৪.কমকে বলেন, ‘চাঁদার জন্য সাবেক এমপি হাবিব হাসানের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। দীর্ঘদিন ধরে তারা চাঁদা চেয়ে আসছিল। চাঁদা না দিতে পারায় এ হামলা করেছে।’
কি কারণে কারা হামলা করল এবং এমন প্রশ্নের জবাবে উত্তরা পূর্ব থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বশির উদ্দিন বলেন, ‘ঈদ সামনে, তাই উত্তরা পূর্ব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক, জাবেদ, এনায়েত, মুন্না ৫০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। যেহেতু সংগঠন করি, তাই প্রতি বছরই দিয়ে আসছি। কিন্তু এবার দিতে পারিনি বলে হামলা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাঁদাবাজরা ফোনে চাঁদা চেয়েছিল। কিন্তু আমি দিতে অস্বীকৃতি জানলে রাত সাড়ে দশটায় ৬০-৭০ জন নিয়ে এসে জাবেদ, মতি টেবিলে বসে। এরপর সর্বপ্রথম মুন্না, তারপর ফারুকুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে গায়ে হাত তোলে। ওই সময় পুলিশও উপস্থিত ছিল।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে উত্তরা পূর্ব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক হাসি দিয়ে দুর্নীতি রিপোর্ট ২৪.কমকে বলেন, ‘আমি তো কিছুই জানি না। আমি নামাজ শেষ করে বাসায় এসে পড়েছি। আমি যতটুকু জানি সে (বশির) একজন ক্যাপ্টেনের বাবার গায়ে হাত দিয়েছিল।’
এদিকে উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের একটি সূত্র দুর্নীতি রিপোর্ট ২৪.কমকে জানিয়েছে, উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর মসজিদের অর্থ অপচয় করতে চেয়েছিলেন বশির। একজন মুক্তিযোদ্ধা মুসল্লি প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করেছেন তিনি। ওই মুক্তিযোদ্ধা হলেন একজন ক্যাপ্টেনের বাবা। সূত্রটির দাবি, অর্থ অপচয়ের চেষ্টা ও মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করায় এমন ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান দুর্নীতি রিপোর্ট ২৪.কমকে বলেন, ‘অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রাথমিকভাবে মসজিদের একটি ব্যাপার নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’
ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ‘মসজিদের উন্নয়নের ব্যাপারে কে যেন তাঁকে বাধা দিয়েছিল। যার কারণে এক মুরুব্বির পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলেন বশির বা তাঁর লোকজন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ক্যাপ্টেনের বাবা একটি জিডিও করেছিলেন। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাতে মারামারির ঘটনা ঘটে। মসজিদের সামনে থেকে বশির তাঁকে জোরপূর্বক নিজের অফিসে নিয়ে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু যেতে চাচ্ছিল না বিধায় জোরাজুরির সময় পাঞ্জাবি ছিঁড়ে গেছে।’
ওসি মজিবুর আরও বলেন, ‘পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তারপর তাঁরা যথাসাধ্য ফেরানোর চেষ্টা করেছে।’